,

বাহুবলে ফসলি জমির মাটি যাচ্ছে ইটভাটায় ভাঙ্গছে রাস্তা :: রাস্তায় দাড়িয়ে এলাকাবাসীর প্রতিবাদ

স্টাফ রিপোর্টার : বাহুবল উপজেলার অর্ধশতাধিক ইটভাটায় দিনে রাতে যাচ্ছে ফসলি জমির মাঠি। উপজেলার দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় খননযন্ত্র (এক্সকাভেটর) দিয়ে ফসলি জমির মাটি কেটে দিনে রাতে ইটভাটায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা বলেছেন, এতে জমির উর্বরতা শক্তি নষ্ট হবে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ভাদেশ্বর ইউনিয়নের কান্দিগাঁও এলাকায় কৃষি জমির মাঠি নেয়ার ফলে কয়েক গ্রামের একমাত্র রাস্তাটি ভেঙ্গে চুরমার হয়ে পড়েছে। এ নিয়ে গত ১৫ জানুয়ারী জেলা প্রশাসক বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগও দায়ের করা হয়েছে। তারপরও বন্ধ হচ্ছে না রাস্তা দিয়ে মাঠি তোলার কাজ। শুধু দিনেই নয় রাতের আধারেও মাঠি কাটছে একদল মাঠি ব্যবসায়ী। সমান তালে অবৈধভাবে তোলা হচ্ছে বালুও। এদিকে মিরপুর ইউনিয়নের মহাশয়ের বাজারের দত্তপাড়া গ্রামের আশ্রায়ন প্রকল্পের পাশে মরা খোয়াই নদী থেকে বালু উত্তোলন করছে একদল বালু খেকো। এই বালু মিরপুর টু মহাশয়ের বাজার সড়কের উপর দিয়ে যাওয়ার ফলে হাজার হাজার মানুষের চলাচলের রাস্তাটি ভেঙ্গে জনগণের চলাচলের অনুপোযোগি হয়ে পড়েছে। ওই রাস্তা দিয়ে শুধু বালুই না নেয়া হচ্ছে না,যাচ্ছে ফসলি জমির মাঠিও।
কান্দিগাও,শাহপুর ও নিজগাঁও গ্রামের এলাকায় খননযন্ত্র দিয়ে ৩/৪ ফুট গভীরতায় ফসলি জমির মাটি কেটে ট্রাকে বোঝাই করা হচ্ছে। এ নিয়ে কয়েক গ্রামের মানুষ গতকাল রবিবার সকালে মাঠি বন্ধে রাস্তায় দাড়িয়ে মানববন্ধন করেছে। তারা অভিযোগ করেন প্রশাসনকে ম্যানেজ করে তারা বীরদর্পে মাঠি নিয়ে যাচ্ছে, ভাঙ্গছে রাস্তা, আমাদের ছেলে মেয়েরা রাস্তা দিয়ে স্কুল কলেজে যেতে পারছে না। এদের যন্ত্রনায় অতিষ্ট আমরা। খননযন্ত্রের চালক আইয়ূব আলী জানান, পাশে নতুন বাজার এলাকায় অবস্থিত ‘কয়েকটি ইটভাটায় মাটি নেওয়া হচ্ছে। জমির মালিকেরা মাটি বিক্রি করেন। এক বিঘা জমির মাটির দাম ১৫ হাজার টাকা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে মাটি বিক্রেতা একাধিক ব্যক্তি জানান, ধান চাষ করে লাভ হয় না। তাই তাঁরা মাটি বিক্রি করছেন।
পাশের পূর্ব জয়পুর গ্রামের বাসিন্দা রশিদ মিয়া বলেন, ‘মানুষে জমিনের মাটি বেচিয়া বাড়ির কিনারে হাওর বানাইরা।’
উপজেলা কৃষি কার্যালয়ের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা বলেন, ‘ফসলি জমির উপরিস্তরের ছয় ইঞ্চি গভীরতায় মাটি কেটে নিলে উর্বরতা নষ্ট হয়। এর পর যে মাটি থাকে, তাতে ফলন ভালো হয় না। প্রতিবছর ১ থেকে ২ শতাংশ আবাদযোগ্য জমি কমছে।
পরিবেশ অধিদপ্তরের হবিগঞ্জ কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক বলেন, মালিক মাটি বিক্রি করলে আইনিভাবে তাঁদের করার কিছু নেই।
বাহুবল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহুয়া শারমিন ফাতেমা জানান, মাটি ও বালু খেকোদের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান চলমান আছে, গত কিছু দিন পূর্বে একজনকে গ্রেফতার করে জেলে পাঠানো হয়েছে। আজ শুনলাম তারা আবার মাটি নিচ্ছে এ বিষয়ে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিব। এলাকাবাসী পরামর্শ দিয়েছি চিহ্নিত মাটি খেকোদের বিরুদ্ধে মামলা করার জন্য।


     এই বিভাগের আরো খবর